VPN কি এবং VPN কতটা নিরাপদ

ভিপিএন কি শুধুমাত্র ইল্লিগ্যাল এবং আনঅথোরাইজড ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্যই ব্যবহার করা হয়? আপনার কি মনে হয় পুরা VPN জিনিসটাই ইল্লিগ্যাল। বিশ্বাস করুন এরকম অনেক প্রশ্ন আমাদের মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়।

VPN কি..? এবং VPN ব্যবহার কতটা নিরাপদ।

VPN শব্দটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত হলেও এটার একচুয়াল কাজটা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। পাশাপাশি VPN সম্পর্কে আমাদের অনেক ভুল ধারণা আছে, আজকে আমাদের সহজ ভাষায় VPN বিষয়ে এক্সপ্লেইন করবো। 

VPN কি? 

VPN কিভাবে কাজ করে? 
এবং VPN সম্পর্কে আমাদের যে ভুল ধারণাগুলো আছে সেগুলো একটু ভেঙে দেওয়র চেষ্টা করবো।

প্রথমেই জানি ভিপিএন কি,
VPN এর ফুল ফর্ম হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক, Virtual Private Network 

VPN কিভাবে কাজ করে

এবং এইটা নিয়ে খুব টেকনিক্যাল ডিটেলসে না গিয়ে আমরা একটা এক্সাম্পল দিয়ে দেখি যে VPN আসলে কিভাবে কাজ করে? আপনি যখন ইন্টারনেটে সার্ভ করেন তখন আপনার ডিভাইস থেকে যখন কোন রিকোয়েস্ট দেন যে আমি ফেসবুক ডট কম ভিজিট করতে চাই, কিংবা আমি কিউট একটা বিড়ালের ছবি দেখতে চাই, তখন আপনার সেই রিকোয়েস্টটা আগে আপনার আইএসপি সার্ভারের কাছে যায়।

আইসপি হচ্ছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার সেটা হতে পারে আপনার মোবাইল ডেটার যে কোম্পানি আছে সেটা অথবা ব্রডব্যান্ড কোম্পানি। সো তাদের মাধ্যমে রিকোয়েস্টটা কিন্তু ওই ওয়েবসাইটে যায়, সেটা হতে পারে. ফেসবুক ডট কম গুগল ডট কম। অথবা যে কোন ওয়েবসাইট। আপনি রিকোয়েস্ট করেন সেখানে, এই যে কানেক্শনের মাঝখানের ফাঁকা জায়গাগুলো, এইখানে হ্যাকাররা চাইলে ব্রীজ করতে পারে এবং আপনার ডেটাগুলোকে হাতিয়ে নিতে পারে। ডেটার মধ্যে আছে প্রথমেই আপনার আইপিএড্রেস. মানে প্রত্যেকটা ডিভাইসের যে একটা ইউনিক অ্যাড্রেস।

এবং পাশাপাশি আপনার আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন হ্যাক করে নিয়ে যেতে পারে যদি আপনি ভিপেন ইউজ করেন তাহলে প্রথমেই আপনার রিকোয়েস্টটা একটা ভিন ক্লায়েন্ট সার্ভারে যাবে। যেখান থেকে আপনার ওই ডেটা প্যাকেজটা ইনক্রিপ করা হবে, ইনক্রিপ্ট করে একটা সিক্রেট টানেলের মাধ্যমে আইএসপি সার্ভারে যাবে। আইসপি সার্ভার থেকে আবারও সেই সিক্রেট টানেলের মাধ্যমে আরো একটা VPN ক্লায়েন্ট সার্ভার হয়ে তাহলে ফাইনাল ডেসটিনেশনে গিয়ে পৌঁছাবে।

এই প্রসেসের মাঝখানে আপনার পুরো ডেটাটা ইনক্রিপট হয়ে যাবে, পাশাপাশি আপনার আইপিএড্রেসটাও চেঞ্জ হয়ে যাবে। So কোন হ্যাকার যদি আপনার ডেটা ব্রীজ করতেও পারে তারপরেও আপনার একচুয়ালি ইনফরমেশনগুলো পাবে না। কারণ ডেটাগুলো সবই ইনক্রিপটেড থাকে, এভাবে ভিপেন ইউজ করলে আপনি ইন্টারনেটে সেভ সিকিউর থাকতে পারবেন। সো এটা হচ্ছে VPN এর কার্যপ্রণালী, VPN কিন্তু শুধুমাত্র আইপি হাইড করার জন্য ব্যবহার করা হয় না বরং ইন্টারনেটে সেফ থাকার জন্য ইউজ করা হয়।

সো ফাইনালি এবার আমরা চলে আসি ভিপেন সম্পর্কে আমাদের যে ভুল ধারণাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে। 

আপনাদেরকে আমার পছন্দের VPN টা সাজেস্ট করতে চাই সেটা হচ্ছে সিমলেক্স ভিপিএন আর Symlex VPN বাংলাদেশে একটা কোম্পানির তৈরি করা ভিপিয়ন এবং এটা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড অনেক জনপ্রিয়। আমি নিজেও ব্যবহার করছি, খুবই ভালো কোয়লিটির এবং আমি ভিপেনের যে যে সুবিধাগুলো বললাম সবগুলোই সিমলেক্স ভিপিএনে আপনারা পাবেন। So দেশের বাইরে গিয়ে যদি আপনি বাংলাদেশের সার্ভার থেকে ভিজিট করতে চান সেটাও কিন্তু করা সম্ভব।

আমাদের মধ্যে প্রথম যে মিথ বা ভুল ধারণা, 

সেটা হচ্ছে VPN শুধুমাত্র ইল্লিগাল কিংবা আনঅথোরাইজ ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্যই ব্যবহার করা হয়। সো আপনারা হয়তো বুঝতেই পারছেন এই কথাটা একদমই ঠিক না, VPN এর কার্যপ্রণালি আমি যেভাবে এক্সপ্লেইন করলাম তাতে হয়তো বুঝতে পারছেন যে VPN টা শুধুমাত্র আনঅথোরাইজ ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য ব্যবহার করা হয় না, বরং আপনার ইন্টারনেট প্রাইভেসি বা সেফটির জন্য ভিপিএন ইউজ করা হয়।

যেন আপনার ডেটা গুলো এনক্রিপ্টেড থাকে এবং হ্যাকার যেন না নিয়ে যেতে পারে। এবং ভিপেন কিন্তু প্রথম প্রথম শুধুমাত্র গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশন এবং বিজনেস অর্গানাইজেশনগুলো ব্যবহার করতো যেন ইন্টারনেট থেকে সেফ থাকা যায়। So VPN এর কাজ একদমই শুধুমাত্র আনঅথরাইজ ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য না।

দ্বিতীয় ভুল ধারণা

অনেকেই মনে করে VPN ইউজ করলে আমরা ইন্টারনেটে কমপ্লিটলি অ্যানোনিমাস হয়ে যাই, এবং আমাদের কোন ট্রেসই থাকে না ইন্টারনেটে। তবে ব্যাপারটা একদমই ভুল। হ্যাঁ আপনি অবশ্যই VPN ইউজ করে আপনার ডেটার উপরে একটা এক্সট্রালিয়ার অফ সিকিউরিটি অ্যাড করতে পারবেন যেন হ্যাকাররা কিংবা ডেটা থ্রিপ থেকে আপনি বাঁচতে পারেন।

তবে আপনি যদি ইন্টারনেটে গিয়ে ইল্লিগাল কিছু করেন, আর কোনো অথোরিটি যদি চায় আপনার ট্রিস বের করতে তাহলে সেটা পসিবল, কঠিন হবে বা ডেফিনেটলি পসিবল। So ভুলেও ভাববেন না যে VPN ইউজ করে আমি উল্টাপাল্টা কিছু একটা করে ফেলবো আর আমকে কেউ ধরতে পারবে না।

তৃতীয় ভুল ধারণা

আমরা অনেকেই মনে করি প্রক্সি এবং VPN এই দুইটা মনে হয় একি, proxy জাস্ট আপনার আইপিটাকে হাইট করে, আর VPN আপনার সকল ডেটাটাকে ইনক্রিপ করে পাশাপাশি আপনার আইপি হাইড করে। So VPN লেয়ার অফ সিকিউরিটি আছে, যেটা proxy তে নেই। Proxy ব্যবহার করে আপনি হয়তো বা ব্যান করা কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবেন। 

কিন্তু আপনার যে ডেটা গুলো যেগুলো সার্ভারে পাঠানো হচ্ছে সেগুলো কিন্তু ইনক্রিপটেড থাকে না, So এই হচ্ছে VPN এবং Proxy এর মধ্যে পার্থক্য।

চতুর্থ ভুল ধারণা

ভিপিএন বাংলাদেশে ইল্লিগাল, ওয়েল ভিপিএন বাংলাদেশে ইল্লিগাল না অল্প কিছু দেশ আছে পৃথিবীর যেখানে VPN ইল্লিগাল।

সেখানে VPN একদমই ব্যান্ড, তবে বাংলাদেশে VPN লিগ্যাল। বিটিআরসির একটা পেজ আছে যেখানে এই ভিপিএন নিয়ে অনেকগুলো নিয়ম কানুন আছে, আমি সবাইকে রিকোমেন্ট করবো যদি আপনি ভিপেন ইউজ করেন তাহলে সেই নিয়মকানুনগুলো একটু পড়ে নেবেন। 

পঞ্চম এবং শেষ ভুল ধারণা

অনেকেই মনে করে টর এবং ভিপিএন এই দুইটা সেম জিনিস, একদমই না। VPN হচ্ছে একটা সিঙ্গেল সার্ভার আপনি যখন কোন ডেটা পাঠান তখন একটা সিঙ্গেল ডিফেন্স সার্ভার হয়ে আপনার ডেটাটা ফাইনাল ডেসটিনেশনে যায়, আর টর ব্রাউজার হচ্ছে একটা ডি সেন্ট্রালাইজড সার্ভার।

মানে ভলেন্টিয়াররা মাল্টিপল সার্ভার মেইনটেইন করে এবং আপনার পুরো ইন্টারনেট কানেকশনটা এনক্রিপ্ট হয়ে মাল্টিপল সার্ভার হয়ে তারপরে ফাইনাল ডেস্টিনেশনে যায়। সো এখানে VPN থেকে টর অনেক সেফ। যদিও টর ব্রাউজার অনেক বেশি স্লো হয় ভিপিনের তুলনায়, সো এই ছিল ভিপেন সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা গুলো।

আসা করছি আপনাদের ভুল ধারণাগুলো ভেঙেছে এবং VPN ব্যবহার করার সময় অবশ্যই আপনারা খেয়াল রাখবেন যেন রেপুটেড কোম্পানির VPN হয়।

শেষ কথা

এই ছিল আমাদের আজকের আর্টিকেল। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে, যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আর্টিকেল টিতে কমেন্ট করে জানাবেন কেমন লাগলো। আপনার ফ্রেন্ডদের সাথে শেয়ার করতে একদমই ভুলবেন না।

Post a Comment

Previous Next

نموذج الاتصال

This Template Designed By E10Script