কিডনি রোগের লক্ষণ কি কি

বাংলাদেশের প্রায় চার ভাগের এক ভাগ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত, এটা দু'হাজার উনিশ সালের রিপোর্ট। এখন হয়তো এই রোগের সংখ্যা আরো বেশি, প্রতিনিয়ত কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে আর এর অন্যতমকারণ হচ্ছে অসচেতনতা ও দৈনন্দিন খাদ্য অভ্যাস। আরো একটি কারণ হলো যখন তখন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন করা। প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের যানাবো কিডনি রোগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।

{tocify} $title={Table of Contents}

আজকে ছয়টা লক্ষণ বলবো এই লক্ষণগুলি যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন এবং ডায়াগনসিস করে নিশ্চিত হবেন. যে আপনার মধ্যে কিডনি রোগ আছে কিনা, যদি থাকে তাহলে চিকিৎসা নেওয়া এখনি শুরু করুণ। 

কিডনি রোগের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি লক্ষণ

প্রস্রাবে ফেনা হওয়ার কারণ

কিডনি রোগের লক্ষণ নাম্বার ওয়ান হচ্ছে প্রস্রাবের সাথে ফেনা উঠা এটা কেন হয়..? কিডনির কাজ কি..? রক্তকে ফিল্টার করে ময়লা আবর্জনা এবং কিছুটা পানি বের করে দেওয়া। এখন চিন্তা করেন আপনার ছাকনিতে (কিডনিতে) যদি কোন গর্ত থাকে বড় বা চোট বর্ত হয় তবে আপনার রক্তে যে প্রোটিন গুলো আছে তাও পাশ হয়ে প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যাবে। তো যখন প্রস্রাবে প্রচুর পরিমানে অ্যালবোমিন বা প্রোটিন যাবে তখন ওই জায়গাটাতে একটা ফেনার মতো তৈরি হবে। এটা কেন হবে? আপনি যদি কখনো ডিম ফেটে থাকেন বা ব্লেন্ড করে থাকেন তাহলে আপনি কল্পনা করতে পারবেন, ওই জায়গাটাতে যেরকম ফেনা ওঠে, আপনার প্রস্রাবের সাথেও সেরকম ফেনা উঠবে। কারণ ডিমের মধ্যেও অ্যালবোমিনের কারণে ফেনা ওঠে। আপনার প্রস্রাবের সাথেও যদি এমন ফেনা ওঠে তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। কেন না যদি কিডনি ড্যামেজ থাকে প্রচুর অ্যালবোমিন বের হয়।

রগে টান লাগার কারণ

কিডনি রোগের লক্ষণ দুই নাম্বার হচ্ছে মাংস পেশীতে ক্র্যাম হওয়া এটাকে আমরা অনেক সময় বলে থাকি রগে টান লেগেছে বা মাংস পেশিতে টান লেগেছে এগুলো বলে থাকি। এটা হওয়ার কারণ কি? কিডনির একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে শরীরে ইলেকট্রলাইটের ব্যালেন্স ঠিক রাখা। ইলেকট্রোলাইট কি? এই যেমন ধরেন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম এই গুলো।

তো যখন আপনার কিডনি ভালোমতো কাজ করবে না, তখন শরীরে ইলেকট্রোলাইটের একটা ইনব্যালেন্স হয়ে যাবে। ইনব্যালেন্স যদি হয় যেমন ধরেন ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হয়ে গেল বা ফসফরাসের একটু এলোমেলো হয়ে গেলো, তখন এটার জন্য আপনার মাংস পেশিতে টান হতে পারে।

চোখের নিচে ফুলে যাওয়ার কারণ

কিডনি রোগের লক্ষণ তিন নাম্বার হচ্ছে চোখের নিচে যে জায়গাটা এইখানে বা যেটাকে নিচের পাতা বলে এইটা ফুলে যাওয়া। কখনো কখনো অন্য কারণেও ফুলতে পারে তবে এটা যদি একদিন দুই দিন হয় তাহলে অতো চিন্তার কিছু না। কিন্তু এটা যদি কন্টিনিউয়াসলি এক সপ্তাহ দুই সপ্তাহ এইরকমই ছলতে তাকে বা এরকম হয় তখন এটা একটা লক্ষণ হতে পারে। কারণ কিডনির আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে শরীরে পানির ব্যালেন্স ঠিক রাখা। আপনার কিডনি যদি ভালোমতো কাজ না করে তখন দেখা যাবে ওর শরীর থেকে ভালোমতো পানি সরাতে পারছে না বা বের করে দিতে পারছে না। তখন শরীরে পানি জমতে শুরুকরে।

তো তখন আপনার এই চোখের নিচের এই জায়গাগুলিতে পুলে যেতে পারে। অথবা অনেকের দেখা যায় পা-ও ফুলে গেছে এরকমও হতে পারে, তো এটা কিডনি রোগের একটা বড় লক্ষণ।

প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার কারণ

কিডনি রোগের লক্ষণ নাম্বার চার হচ্ছে প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া এটা কেন হয়..? যেই কারণে প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন যেতে পারে। নাম্বার একে বলেছিলাম সেই সেই কারণেই আসলে প্রস্রাবের সাথে রক্তও যেতে পারে. তবে এটা আসলে আরো অন্য রোগের কারণেও হতে পারে. যেমন হচ্ছে আপনার টিউমারের ক্ষেত্রেও এটা হতে পারে. অথবা হচ্ছে কিডনিতে স্টোন যদি হয়. সেক্ষেত্রে হতে পারে. অথবা ইনফেকশনের হতে পারে.

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ কী

কিডনি রোগের লক্ষণ পাঁচ নাম্বার হচ্ছে বারবার প্রস্রাবের বেগ আশা, এটার কারণ কি..? কিডনি যখন শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ভালোমতো বের করতে পাারে না। বর্জ্য পদার্থ শরীরে রয়েই যাচ্ছে তখন শরীর বারবার সিগনাল দিচ্ছে প্রস্রাব করো, বর্জ্য পদার্থ রয়েই গেছে প্রস্রাব করো। 

এই কারণে আসলে বারবার প্রস্রাবের এই অনুভূতি আসে, তো এটা আসলে ইনপেকশন জনিত কারণেও হতে পারে। তো এক্ষেত্রেও আসলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে ডায়াগনোসিস করতে হবে।

শুস্ক বা ড্রাই স্কিন

কিডনি রোগের লক্ষণ ছয় নাম্বার হচ্ছে ড্রাই বা শুস্ক ত্বক। মানে হচ্ছে আপনার চামড়া শুস্ক হয়ে যাওয়া অথবা শরিলের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানির অনুভূতি এটার কারণ কি..? আগে যেটা বললাম যে কিডনি আসলে শুধুমাত্র যে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে তা না এটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ হচ্ছে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখা। শরীরের মধ্যে ইলেকট্রোলাইট যদি ইমব্যালেন্স হয়ে যায় সেইক্ষেত্রে আসলে বোন ডিজিজ হতে পারে অথবা মিনারেল ডিজিজ হতে পারে। সেক্ষেত্রেও আপনার এই ড্রাই স্কিন এগুলোও হতে পারে।

তো এই লক্ষণগুলি যদি আপনি আপনার মধ্যে দেখেন তাহলে আপনার উচিত হবে দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলে ডায়াগনোসিস করা এবং নিশ্চিত হওয়া আপনার কিডনিটি আসলে ভালো আছে কিনা। যদি না হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করা।
 

শেষ কথা

প্রিয় দরিদ্র আইটি'র পাঠক বিন্দু কেমন লাগলো আজকেরে এই আর্টিকেল কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। এমন আরো তথ্যবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভজিট করুন। এবং সব সময় সবার আগে সব ধরনের আপডেট পেতে আমাদের Google News ফিড ফলো করে রাখুন। ভালো থাকবেন সবাই, সুস্থ থাকবেন।

Post a Comment

Previous Next

نموذج الاتصال

This Template Designed By E10Script